ফরিদপুরে নির্বাচনে সহযোগীতা না করায় বাড়িঘর ভাংচুর ও লুটপাট
ফরিদপুরে
নির্বাচনে সহযোগীতা না করায় বাড়িঘর
ভাংচুর ও লুটপাট
জিল্লুর রহমান রাসেল, ফরিদপুর
ফরিদপুর
সদর উপজেলার কৈজুরী ইউনিয়নের ঘোরাদা গ্রামে বাড়িঘর ভাঙচুর ও লুটপাটের ঘটনা
ঘটেছে। গত ১ অক্টোবর
সন্ধ্যায় সিরাজ সিকদারের বাড়িতে এ ভাংচুর ও
লুটপাটের ঘটনা ঘটে। এ বিষয়ে সিরাজ
সিকদার বাদী হয়ে সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট
দ্রুত বিচার আদালতে একটি
মামলা দায়ের করেছেন।
সরেজমিন
পরিদর্শন ও মামলার বিবরণী
থেকে জানা যায়, গত ইউনিয়ন পরিষদ
নির্বাচনে মামলার ১নং আসামী জলিল মোল্লার পক্ষে বাদী সিরাজ সিকদার ও তার অনুসারীরা
কাজ না করায় এবং
তিনি নির্বাচনে পরাজিত হওয়ায় মনমালিন্য শুরু হয়। তার পর থেকে নানা
রকম হুমকি ধমকির পর গত ১
অক্টোবর সন্ধ্যার পর এ ভাঙচুর
ও লুটপাট করা হয়। তারা ঘরে ঢুকে নগদ দুই লক্ষ টাকা ও চার ভরি
দুই আনা পরিমান স্বর্ণালংকার লুট করে নিয়ে যায়।
মামলার
বাদী সিরাজ সিকদার জানান, ১ নং আসামী
জলিল মোল্লাসহ অন্যান্য আসামীরা এলাকার চিহ্নিত সন্ত্রাসী, দাঙ্গাবাজ, চাঁদাবাজ, লুটারু, তাদের সাথে এলাকার বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আমাদের মনোমালিন্য চলছিলো। জলিল মোল্লা বিভিন্ন সময়ে আমাদেরকে তার দলে টানার চেষ্টা করছিলো। তারা অত্যন্ত খারাপ লোক হওয়ায় আমরা তাদের সাথে চলাফেরা করি না। জলিল মোল্লা বিগত ইউনিয়ন পরিষদ
নির্বাচনে
সদস্য পদে নির্বাচন করে কিন্তু আমরা তার দলে ছিলাম না এবং তাকে
এলাকার লোকজন ভোটও দেই নাই, যে কারণে সে
বিপুল ভোটে পরাজিত হয়। ভোটে পরাজিত হওয়ার
পর
হতে সে বলছে নির্বাচনে
তার ৫ লক্ষ টাকা
ব্যয় হইছে তা আমাদের দিতে
হবে এবং তা না হলে
আমাদের এলাকা ছাড়া করবে এবং ঘরবাড়ী ভাংচুর করবে, খুন করবে।
১
অক্টোবর সন্ধ্যা ৭.৩০ টার
দিকে জলিল মোল্লার নেতৃত্বে উল্লেখিত আসামীরা রামদা, ছ্যান, চাপাতি ও লাঠি সোটা
নিয়ে আমার বাড়ীতে হামলা করে। আসামীরা আমার বাড়ী ঘর ভাংচুর শুরু
করে এবং আমার বাড়ীর ঘরের টিনের বেড়া কোপাইয়া এবং ঘরের সকল আসবাবপত্র ভাংচুর করে আমার ৪ লক্ষ টাকার
ক্ষতি করে এবং ঘরে থাকা নগদ ২ লক্ষ টাকা
জলিল মোল্লা নিজেই নিয়া যায়। এ সময় আমার
স্ত্রী ও পুত্রবধু লুট
করতে বাধা দিলে তাদের মারধোর করে এবং শ্লীলতাহানী করে।
ঘরের
সাববাক্স ভেঙ্গে আসামীরা স্বর্নের হার, আংটি, চুরিসহ চার ভরির উপরে স্বর্ণালংকার লুট করে যার মুল্য ৪ লক্ষ টাকা।
তাদের অত্যাচারে গ্রামের কোন মানুষই শান্তিতে বসবাস করতে পারে না। যখন ইচ্ছা যাকে ইচ্ছা মারধোর করে। বাড়িঘর ভাংচুর করে। আমরা এদের হাত থেকে রেহাই চাই।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এলাকার একাধিক ব্যক্তি জানান, এই জলিল মোল্লা ও তার দলের লোকজনের অত্যাচারে আমরা এলাকাবাসী নিশ্চিন্তে ঘুমাতেও পারি না। কখন কার উপর হামলা করে বসে! তাদের মত মতো কেউ না চললেই তার উপর তারা চড়াও হয়। হাতুড়ী দিয়ে পিটাবে না হয় কোপাবে, বাড়িঘর ভাংচুর করবে, লুটপাট করবে। আমরা সাধারণ মানুষ কি নিরাপদে বসবাস করতে পারবো না? জলিল, কয়েকজন মাতুব্বর ও তাদের ছেলেরা মুলত এই অত্যাচার চালায়। আমরা প্রশাসনের কাছে এই জলুমবাজ লোকদের হাত থেকে রক্ষা পেতে সাহায্য চাই।
এ
বিষয়ে জলিল মোল্লার মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, সিরাজ সিকদারের বাড়িতে আমাদের বিপক্ষে মিটিং বইছিলো। আমাদের কিছু লোকজন সে সময় তাদের
বাড়িতে যায় এবং কথা কাটাকাটি হলে লাঠি দিয়ে ঘরে বারি দেয়। তবে কোন লুটপাট হয় নাই। তাছাড়া
আমি ওই সময় ছিলাম
না।
এ বিষয়ে ওই ওয়ার্ডের মেম্বার দুলাল জানান, ঘটনা শোনার পর আমি ওই বাড়িতে গেছিলাম। ঘর কোপানো হইছে, ভাংচুর করা হইছে। তবে কাজ যারাই করছে, খারাপ হইছে। আমরা সবাই মিলে মিশে থাকতে চাই। পরবর্তীতে যেন এই কাজ আর না হয় সেই চেষ্টা করবো।
Tag:
No comments: