প্রতিদিনের জীবন

প্রতিদিনের জীবন
ডেঙ্গু থেকে বাঁচতে করণীয়

ইসলামী জীবন

» »Unlabelled » চিকিৎসা অবহেলায় মুক্তিযোদ্ধার মৃত্যু ঘটনায় সংঘর্ষ, আহত ১৮

চিকিৎসা অবহেলায় মুক্তিযোদ্ধার মৃত্যু ঘটনায় সংঘর্ষ, আহত ১৮


বিশেষ প্রতিনিধি

ফরিদপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসার অবহেলায় এক বীর মুক্তিযোদ্ধার মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ করছে তার স্বজনরা। পরে হাসপাতালের ইন্টার্ন চিকিৎসকদের সাথে সংঘর্ষে রোগীর স্বজনসহ কমপক্ষে ১৮ জন আহত হয়েছে। সোমবার ( সেপ্টেম্বর) দিবাগত রাতে ঘটনা ঘটে।

জানা গেছে, শহরের কমলাপুর এলাকায় বসবাসকারী বীর মুক্তিযোদ্ধা নয়ন খানকে (৯৫) অসুস্থাবস্থায় সোমবার দিবাগত রাত সাড়ে ১১টার দিকে ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের নেয়া হয়। হাসপাতালের দোতালায় বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সংরক্ষিত ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয় তাকে।

নয়ন খানের নাতি আলমগীর বিশ্বাস বলেন, রাত ১২টার দিকে নানার শ্বাসকষ্ট হলে নার্সদের জানাই। তারা ইমার্জেন্সি চিকিৎসককে জানাতে বলেন। এরপর ইমার্জেন্সিতে কর্তব্যরত চিকিৎসককে রোগীকে ওয়ার্ডে গিয়ে একটু দেখার জন্য এবং পরে ন্যুনতম অক্সিজেন দেয়ার অনুরোধ জানাই। কিন্তু তিনি কোনো ব্যবস্থাই নেননি। কিছুক্ষণ পর এসে দেখি আমার নানার মৃত্যুর হয়েছে। সময় ডাক্তারদের সাথে আমাদের কথাকাটাকাটি হয়। পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে উঠলে আমার মা আমাকে সেখান থেকে সরিয়ে একটি বাথরুমে আটকে রাখেন। এরপর ৫০ থেকে ৬০ জনের মতো এসে বাথরুম থেকে বের করে আমার ওপর হামলা চালায়।

রোগীর স্বজনদের অভিযোগ, ইন্টার্ন চিকিৎসকদের সাথে বহিরাগত মেডিক্যাল কলেজের ছাত্রনেতারাও অংশ নেয়।

হামলায় আহতরা হলেন, নয়ন খানের নাতি আলমগীর বিশ্বাস (২৮), তৌহিদ বিশ্বাস (২৫), আলিফ খান (১৪) ও হামজা খান (১২), মেয়ে জেসমিন (৪২), সাবিনা ইয়াসমিন (৫০) ও রেবেকা সুলতানা মনি (৩৫)। এছাড়া ঘটনার সময় লাশের পাশে বসে আহাজারি করতে থাকা তার বয়োবৃদ্ধ স্ত্রী হালিমা বেগমকেও (৮৫) ধাক্কা দিয়ে সিট থেকে ফেলে দেয়া হয় বলে অভিযোগ করা হয়। আহতদের মধ্যে চারজনকে পুলিশ হেফাজতে ফরিদপুর জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ইন্টার্ন চিকিৎসক বলেন, ‘রোগীর স্বজনেরা আমাদের কাছে অক্সিজেন চেয়েছিল। কিন্তু আমাদের কাছে সরবরাহ করার মতো অক্সিজেন না থাকায় আমরা তাদের বাইরে থেকে অক্সিজেন এনে রোগীকে দেয়ার জন্য একটি স্লিপও লিখে দেই। কিন্তু এতে তারা রাজি না হলে কথাকাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে তারা আমাদের ওপর হামলা করে। এতে হাসপাতালের স্টাফ অর্ণব (২৬), ইন্টার্ন ডাক্তার মাহমুদুল (২৬), শামিম (২৪), রোকন (২৪), শিহাব (২৪), এজাজ (২৬), মহিন (২৬), শাকিব (২৬), পাভেল (২৬), ইসতেফার (২৪), জাহিদ (২৬), সাব্বির (২৬) ফরহাদ (২৬) আহত হন। তারা ফরিদপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ছাত্রাবাসে থাকেন।

ফরিদপুর কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এম এ জলিল বলেন, খবর পেয়ে রাতেই পরিস্থিতি শান্ত করা হয়। আহতরা আশঙ্কামুক্ত রয়েছে। মরহুমের আত্মীয়-স্বজনদের থানায় নিয়ে আসা হয়। বর্তমানে তাদের হাসপাতালে ভর্তি করে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে।

তিনি আরো বলেন, ঘটনায় মঙ্গলবার সকালে হাসপাতালের চিকিৎসকরা মিটিংয়ে বসেছেন। আইনগত ব্যবস্থাগ্রহণ প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।

ফরিদপুরের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ডা. এনামুল হক বলেন, হাসপাতালে প্রতিদিনই কম-বেশি ঝামেলা হয়। আমি বর্তমানে ছুটিতে হাসপাতালে বাইরে রয়েছি। তবে গতরাতে একটি মারামারির কথা জানতে পেরেছি। বিস্তারিত জেনে পরে জানানো হবে।

জানাগেছে, ঘটনা তদন্তে ফরিদপুরের এডিএম অমিত দেবনাথকে প্রধান করে তিন সদস্য-বিশিষ্ট কমিটি গঠন করা হয়েছে। তিন দিনের মধ্যে কমিটিকে রিপোর্ট দেয়ার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

 

  

«
Next
Newer Post
»
Previous
Older Post

No comments:

Leave a Reply