ফরিদপুরে বিএনপির নাম ভাঙিয়ে বিক্রি হচ্ছে সরকারি রাস্তা ও কবরস্থানের ইট
ফরিদপুরে বিএনপির নাম ভাঙিয়ে বিক্রি হচ্ছে সরকারি রাস্তা ও কবরস্থানের ইট
ডেস্ক রিপোর্ট
ফরিদপুরে বিএনপির নাম ভাঙিয়ে একটি প্রভাবশালী মহলের ইন্ধনে সরকারি রাস্তা ও একটি কবরস্থানের ইট বিক্রি করে দেয়ার অভিযোগ উঠেছে। ওই রাস্তা ও কবরস্থান নদী ভাঙনের কবলে পড়ে পরিত্যক্ত হওয়ায় স্থানীয় ওই মহলটি ইট তুলে অন্যত্র বিক্রি করে দিচ্ছে।
১৯
অক্টোবর
শনিবার সকালে স্থানীয় কয়েকজন তাঁতে বাধা দেন এবং প্রশাসনকে অবগত করেন। তবে বিষয়টি নিয়ে পাল্টাপাল্টি অভিযোগ দিচ্ছে ক্রেতা ও বিক্রেতারা।
জানা যায়, জেলা সদরের ডিক্রিরচর ইউনিয়নের
২ নং ওয়ার্ডের নাজির বিশ্বাসের ডাঙ্গী এলাকায় নদী ভাঙনে একটি ইটের রাস্তা পরিত্যাক্ত হয়ে পড়ে। পাশাপাশি ওই রাস্তা সংলগ্ন কবরস্থানটিও ভাঙন ঝুঁকিতে রয়েছে। পরবর্তীতে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানের হস্তক্ষেপে রাস্তার কিছু ইট তুলে আনা হয়। সরকার পরিবর্তনে বর্তমানে ইউপি চেয়ারম্যান এলাকায় না থাকায় ডিক্রিরচরের সিএন্ডবি ঘাট এলাকার প্রভাবশালী মহল বিএনপির নামে প্রভাব খাটিয়ে ওই রাস্তা ও কবরস্থানের দেয়ালের ইটগুলো বিক্রি করে দিচ্ছেন। তাঁদের মধ্যে আলম সরদার নামে এক ব্যবসায়ীর নেতৃত্বে এসব কর্মকান্ড হচ্ছে বলে স্থানীয়রা অভিযোগ করেছেন। তাঁর নেতৃত্বে ওই রাস্তা সংলগ্ন বাসিন্দা হান্নান বিশ্বাস গত কয়েকদিনে প্রায় ২০ হাজার ইট বিক্রি করেছেন বলে স্থানীয়রা জানিয়েছেন।
এর মধ্যে ৬ হাজার
৫০০
টাকা
হাজার করে দুই হাজার ইট কিনে নেন পূবাডাঙ্গী এলাকার ইউনুস নামে এক ব্যক্তি। এ
দিন
সকাল ১০
টার দিকে
ট্রলারে করে ইট সিএন্ডবি ঘাট এলাকায় ফেলানো হয়। পরে স্থানীয় কয়েকজন বিষয়টি জানতে পেরে বাধা দেন।
বিষয়টি নিয়ে জানতে চাইলে ক্রেতা
ইউনুস
জানান, তিনি নাজির বিশ্বাসের ডাঙ্গী এলাকার হান্নান বিশ্বাসের নিকট থেকে ইটগুলো কিনে নিয়েছেন। তিনি জানতেন না এসব সরকারি ইট। তবে বিক্রেতা হান্নান বিশ্বাস বিষয়টি অস্বীকার করেছেন। তিনি বলেন, এসব ষড়যন্ত্রমূলক ও বানোয়াট। গত দুদিন যাবৎ এখান থেকে ইট তুলে নেয়া হচ্ছিলো। আমি তাঁদের বাধা দেয়ায় আমার নাম বলেছে।
৫ তারিখের পর থেকে এই চরে তান্ডব চলছে। গোরস্থানের গেটও ভেঙে নিয়ে গেছে। এ বিষয়ে স্থানীয়
নেতাদের সাথে আলাপ করছি। পলাশ ভাইকেও ফোন করে সব জানাইছি।
বিকেলে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, সিএন্ডবি ঘাট এলাকায় স্তুপ করে রাখা হয়েছে কয়েক হাজার ইট। এ সময় স্থানীয়রা বলেন, ওপার থেকে রাসেল নামে একজনের ট্রলারে করে ইটগুলো আনা হয়েছে। এভাবে গত কয়েকদিন যাবৎ ইট ট্রলারে করে আনা হয়েছে বলে তাঁরা জানান।
স্থানীয় বাসিন্দা ও জেলা বিএনপির সদস্য আসলাম শেখ বলেন, আজ সকালে দেখি ইটগুলো ট্রলারে করে
এনে
এখানে রাখা হয়েছে। পরে ট্রাকে তুলতে বাঁধা দিই। এরপর ইউএনও ও থানা পুলিশকে বিষয়টি জানাই। পরে পুলিশ এসে ঘটনার বিষয়ে তথ্য নিয়ে গেছেন।
তিনি আরও বলেন এই মহলটি যে দল ক্ষমতায় আসে তখন ওই দলের ছত্রছায়ায় চলে। গত একমাসে তাঁদের নেতৃত্বে প্রায় ২০ হাজার ইট বিক্রি করে দেয়া হয়েছে। এভাবে চলতে থাকলেতো এলাকার দুর্নাম ও দলের ভাবমূর্তি নষ্ট হবে। আমরা এর মূলহোতা
আলম সরদারকে আইনের আওতায় নিয়ে সুষ্ঠ বিচারের দাবি জানাই যেন এরকম কাজ আর না হয়।
বিষয়টি নিয়ে জানতে চাইলে স্থানীয় ইউপি সদস্য (ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান) মো. হায়দার খান বলেন, খবর পেয়ে আমি ঘটনাস্থলে গিয়েছিলাম। যারা ইট কিনে এনেছে তাঁদের সাথে কথা বলে জেনেছি, ওই এলাকার হান্নান বিশ্বাসের নিকট থেকে ইটগুলো কিনে আনা হয়েছে। এখন আমাদেরতো উপর থেকে ইটগুলো উঠিয়ে আনার কোনো নির্দেশনা দেয়া হয়নি। তবে বিষয়টি ইউএনওকে জানানো হয়েছে।
এ বিষয়ে কোতয়ালী থানার ওসি
মোঃ আসাদুজ্জামান জানান, সংবাদ পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশের একটি টিম পাঠানো হয়েছিলো। ইটগুলো
জব্দ করে স্থানীয় একজনের হেফাজতে রাখা হয়েছে। তবে এখনও কোন অভিযোগ পাইনি।
অভিযোগ পেলে তদন্ত অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এ বিষয়ে সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার তামান্না তাসনীমের মুঠোফোনে একাধিকবার ফোন দেয়া হলে রিসিভ না করায় বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি।
Tag:
No comments: