ইজিবাইক চালককে হত্যা করেও শেষ রক্ষা হলো না
ইজিবাইক চালককে হত্যা করেও শেষ রক্ষা হলো না
ডেস্ক রিপোর্ট
ফরিদপুরে মোশারফ বেপারী (৩৩) নামে এক ইজিবাইক চালককে হত্যা করে ইজিবাইক নিয়ে পালিয়েও শেষ রক্ষা হলো না। ঘটনার ৪৮ ঘন্টার মধ্যে তিনজনকেই গ্রেফতার করেছে কোতয়ালি থানা পুলিশ। তাঁরা শহরের চরকমলাপুর
এলাকার মৃত আলেফ মৃধার ছেলে সোহেল মৃধা (৩৫), ঝাউখোলা এলাকার বাবুল শেখের ছেলে চান্দু শেখ (২২) ও জয়পুর জেলার পাঁচবিবি
থানার কড়িয়া বাজার এলাকার মৃত আলম হোসেনের ছেলে সাগর হোসেন (২৮)। প্রত্যেকের নামে একাধিক মামলা রয়েছে। তারমধ্যে,
সোহেলের নামে তিনটি হত্যা মামলাসহ ৭টি, চান্দু শেখের নামে একটি হত্যা মামলাসহ ৪টি ও সাগরের নামে ৬টি মামলা রয়েছে।
২৫ অক্টোবর শুক্রবার
বিকেল ৩.৩০টার দিকে ফরিদপুর পুলিশ সুপার কার্যালয়ে মোশারফ হত্যাকান্ড নিয়ে সংবাদ সম্মেলনে
এসব তথ্য জানান অতিরিক্ত
পুলিশ সুপার (ক্রাইম এন্ড অপস্) শৈলেন চাকমা। এ সময় অতিরিক্ত
পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মো. সালাউদ্দিন
ও কোতয়ালী থানার ভারপ্রাপ্ত
কর্মকর্তা (ওসি) মো. আসাদউজ্জামান
ও তদন্তকারী
কর্মকর্তা এস আই ফাহিম ফয়সাল তরফদার
উপস্থিত ছিলেন।https://www.profitablecpmrate.com/pdi063hwz?key=0299aef94c4809d41c7b37ad6a5dbe45
এর আগে ২৪ অক্টোবর বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত সাড়ে তিনটার দিকে জেলা সদরের কানাইপুর
ইউনিয়নের কোশাগোপালপুর
এলাকার একটি আখ ক্ষেত থেকে নিখোঁজ ইজিবাইক চালক মোশারফ
বেপারী(৩৩) লাশ উদ্ধার করে কোতোয়ালি থানা পুলিশ। সে বুধবার (২৩ অক্টোবর) বিকেলে বাড়ি থেকে ইজিবাাইক
নিয়ে বের হয়ে নিখোঁজ হয়।
সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, বৃহস্পতিবার রাতে কোতয়ালী থানার এস আই ফাহিম ফয়সাল কিলো-১ পেট্রোল ডিউটি করার সময় কানাইপুর ইউনিয়নের এবলুম রেষ্টুরেন্টের সামনে একটি ইজিবাইকের গতিবিধি দেখে সন্দেহ হলে গতিরোধ করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। ওই ইজিবাইক চালাচ্ছিলেন আসামী চান্দু শেখ এবং তাঁর সাথে ছিলেন সোহেল মৃধা।
তিনি জানান, তাঁদের জিজ্ঞাসাবাদের সময় এলোমেলো কথা বলতে থাকে। সে সময় তাঁরা নেশাগ্রস্থও ছিলো। পরে ওই ইজিবাইকটিসহ তাঁদের থানায় নিয়ে আসা হয়। এমন খবর পেয়েই মোশারফের স্ত্রী সুরাইয়া বেগম থানায় ছুটে আসে এবং জানায় তাঁর স্বামী ইজিবাইক নিয়ে বের হয়ে নিঁখোজ রয়েছে। পরে আটক দুজনকে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ। এক পর্যায়ে আটক দুজন স্বীকার করে নিঁখোজ মোশারফকে তাঁরা হত্যা করেছে। পরে এ দুজনের দেয়া তথ্যমতে রাত আড়াইটার দিকে লাশটি উদ্ধার করে পুলিশ। এছাড়া এদের দেয়া তথ্যমতে এ হত্যাকান্ডের সাথে জড়িত সাগর হোসেনকে শুক্রবার সকালে শহরের আলীপুর এলাকার শ্বশুর বাড়ি থেকে আটক করে পুলিশ।
গ্রেফতারকৃতদের বরাত দিয়ে হত্যাকান্ডের
বর্ণনা দেন পুলিশের এই কর্মকর্তা। তিনি বলেন, প্রথমে বুধবার বিকালে শহরের জনতা ব্যাংকের মোড় থেকে কানাইপুর
যাওয়ার উদ্দেশ্যে ইজিবাইকটি ভাড়া করে আসামী সোহেল মৃধা ও সাগর। পরে কানাইপুর
পার হয়ে ঝাউখোলা নামক এলাকায় চান্দু শেখের বাড়িতে যায় সোহেল। ১৫ থেকে ২০ মিনিট পর চান্দুকে
নিয়ে সোহেল ফিরে আসে। এরপর চালককে কোষা গোপালপুর
বাজারের দিকে যেতে বলে। যাওয়ার পথে কোষা গোপালপুর
ও ঝাউখোলার
মধ্যবর্তী নির্জন স্থানে একটি আখক্ষেতের পাশে পৌছালে চালককে দাড়াতে বলে। তখন আনুমানিক
সন্ধ্যা সাতটা বাজে। চালক দাড়ানোর সাথে সাথে চান্দু তাকে গাড়ি থেকে ফেলে দেয় এবং সোহেল ও সাগর চালকের গলা টিপে ধরে। এ সময় ধস্তাধস্তি
করতে করতে আখক্ষেতের ভেতরে চলে যায়। একপর্যায়ে সোহেলের হাতে থাকা কাচি দিয়ে চালকের চোখে আঘাত করে। এরপর তিনজন মিলে গলা টিপে শ্বাসরোধ
করে মৃত্যু নিশ্চিত করে গাড়ি নিয়ে চলে আসে।
এ ঘটনায় নিহতের স্ত্রী সুমাইয়া বেগম অভিযোগ দায়ের করলে সেটি হত্যা মামলা হিসেবে দায়ের করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন শৈলেন চাকমা। এছাড়া আসামীদের বিকালের মধ্যে আদালতে প্রেরণ করা হবে এবং কমপক্ষে এক সপ্তাহের রিমান্ড চাওয়া হবে বলে জানান। এ সময় বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক্স মিডিয়ার সাংবাদিক উপস্থিত ছিলেন।
Tag:
No comments: