সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি প্রতিষ্ঠা, সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ প্রতিরোধ এবং সামাজিক সমস্যা নিরসন শীর্ষক প্রশিক্ষণ কর্মশালা
ফরিদপুরে ইসলামের ভুল ব্যাখ্যা চলবে না, ইমামদের নিয়ে প্রশিক্ষণ কর্মশালায় ডিসি কামরুল আহসান তালুকদার
জিল্লুর রহমান রাসেল, ফরিদপুর
ফরিদপুর
জেলাকে একটি আধুনিক, স্মার্ট ও ইসলামিক নগরী হিসেবে গড়ে তোলার প্রত্যয় ব্যক্ত করে জেলা প্রশাসক মোঃ কামরুল আহসান বলেছেন- ‘ফরিদপুরে ইসলামের ভুল ব্যাখ্যা চলবে না, কোরআন-হাদিসের আলোকে ব্যাখ্যা করতে হবে।’
২৬ জুলাই
বুধবার সকাল ১১টায় ফরিদপুর সদর উপজেলা পরিষদের ৬০০ আসন বিশিষ্ট মাল্টিপারপাস হল রুমে সাম্প্রদায়িক
সম্প্রীতি প্রতিষ্ঠা, সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ প্রতিরোধ
এবং সামাজিক সমস্যা নিরসন শীর্ষক প্রশিক্ষণ কর্মশালায় আলেমদের প্রতি আহ্বান করে তিনি এ কথা বলেছেন।
ও জেলা প্রশাসন ও ইসলামি
ফাউন্ডেশন ফরিদপুরের আয়োজনে এ প্রশিক্ষণ কর্মশালা
অনুষ্ঠিত হয়। এতে জেলার প্রায় ৬০০ ইমাম ও খতিব অংশগ্রহণ
করেন।
এ
সময় তিনি প্রধান অতিথি’র বক্তব্যে আরো
বলেন- ‘এই ফরিদপুরকে আধুনিক,স্মার্ট
ও ইসলামিক নগরী হিসেবে গড়ে তোলা হবে। একটি মাদক ও জঙ্গীবাদ মুক্ত,
অপসংস্কৃতি মুক্ত
শহর হবে। যেখানে উগ্রবাদ থাকবে না, সন্ত্রাসবাদ থাকবে না।
জেলা প্রশাসক
ইমাম-খতিবদের উদ্দেশ্যে বলেন- ‘বর্তমান প্রজন্ম যেন বিপথে না যায়, জঙ্গীবাদে
যেন না জড়ায় সেদিকে
খেয়াল রাখবেন। আপনি প্রতিরোধ করুন, না পারলে আমাদের
জানাবেন। আর না হলে
আপনারা দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ হবেন।’
ইমাম-খতিবদের উদ্দেশ্যে তিনি আরো বলেন- ‘ফরিদপুরে প্রায় ৬ হাজার মসজিদ
রয়েছে। আমরা এই ৬ হাজার
ইমাম সাহেবদের নিয়ে আমরা একটি মহা সমাবেশ করবো। এই ফরিদপুরে ১৮৮৭টি
গ্রাম আছে। এই ৬ হাজার
ইমাম যদি দায়িত্ব নেয়, তাহলে সমাজের আত্মহত্যা প্রবণতা কমে যাবে, মাদক কমে যাবে। আত্মহত্যা প্রবণতা কমাতে ইমাম সাহেবরা সবচেয়ে বড় ভূমিকা পালন
করতে পারে। আপনারা যদি এক একজন তিনটা
গ্রামের দায়িত্ব নেন যে, এই আমার এই
তিন গ্রামে কোনো মাদকসাক্ত হবে না, কোনো বাল্যবিবাহ হবে না, কোনো জঙ্গীবাদ হবে না, কোনো নারী নির্যাতন হবে না, কোনো ইভটিজিং হবে না, কোনো সন্ত্রাস থাকবে না। আপনারা যদি সকলে একযোগে এই নেতৃত্ব নেন,
তাহলে আধুনিক ও স্মার্ট ইসলামিক
ফরিদপুর গড়ে তোলা সম্ভব হবে।’
এ সময় বিশেষ অতিথি’র বক্তব্যে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অর্থ) ইমদাদ হুসাইন বলেন- ‘মাদ্রাসা থেকে কোনো একজন ছেলে যেন বিপদগামী না হয়। সেক্ষেত্রে পুলিশের চেয়ে ইমামদের ভূমিকা বেশি। জুম্মার খুতবায় জঙ্গীবাদ সম্পর্কে ব্যাখ্যা করুন যে সন্ত্রাস জঙ্গীবাদ ইসলামের সাথে নয়। মুসল্লিদের প্রতি নজর রাখুন, তার আচরণ অস্বাভাবিক কি-না, যে উল্টা-পাল্টা কথা বলে, তাদের আপনারা মডিফাইড করবেন। প্রয়োজনে পুলিশকে জানাবেন। অভিভাবকদের সচেতন করবেন।’
ফরিদপুর
জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি শামীম হক বলেন- ‘মাননীয়
প্রধানমন্ত্রী আপনাদের বেতন বৃদ্ধি করেছেন, তার কারনে আপনারা সকল সুযোগ সুবিধা পাচ্ছেন। এই সমাজে আপনাদের
গুরুত্ব অপরিসীম। আগামী প্রজন্ম যেন জঙ্গীবাদ, সন্ত্রাসের দিকে ধাবিত না হয়, আপনারা
সেদিকে গুরুত্বের সাথে দায়িত্ব পালন করবেন।’
এ
সময় তিনি সকলকে ‘জয় বাংলা’ শ্লোগান
দেয়ার অনুরোধ জানিয়ে বলেন, ‘জয় বাংলা বললে
পাপ হবে, এমন কোনো বিধান নেই। এটি আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধের স্বাধীনতার শ্লোগান।’
কর্মশালায়
প্রধান আলোচক ছিলেন ইমাম প্রশিক্ষন একাডেমির পরিচালক মো. আনিসুজ্জামান শিকদার। এছাড়া আলোচক ছিলেন দুদকের যুগ্ন পরিচালক মজিবুর রহমান, মাদক নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক শামিম
হোসেন, শাহ ফরিদ জামে মসজিদের খতিব হাফেজ মাওলানা আবুল কালাম আজাদ, শামসুল উলুম মাদরাসার মোহতামিম মাওলানা মুফতি কামরুজ্জামান।
অতিরিক্ত
জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) মো.
আশেকুল হকের সভাপতিত্বে সভায় আরও বক্তব্য দেন সদর
উপজেলা চেয়ারম্যান আঃ রাজ্জাক মোল্লা। এছাড়া সদর উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভুমি) জিয়াউর
রহমান উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠানে
স্বাগত বক্তব্য দেন ইসলামিক ফাউন্ডেশন ফরিদপুরের উপ পরিচালক মো.
সাহাবুদ্দীন। শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার লিটন ঢালী।
Tag:
No comments: