ভাঙ্গায় ১০ বছরের শিশু ধর্ষণের শিকার
ভাঙ্গায় ১০ বছরের শিশু ধর্ষণের শিকার
বিশেষ প্রতিনিধি
ফরিদপুরের ভাঙ্গা উপজেলার নুরুল্লাগঞ্জ ইউনিয়নের হরুপদিয়া গ্রামে ৩য় শ্রেণিতে পড়ুয়া ১০ বছরের এক শিশু ধর্ষণের শিকার হয়েছে। ঘটনাটি জানাজানি হলে গ্রামের মোড়লরা শালিসের নামে বিষয়টি ধামাচাপা দেয়ার চেষ্টা করে। ৯ এপ্রিল বুধবার ভাঙ্গা থানা পুলিশ বিযয়টি জানতে পেরে ওই শিশুটিকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে। পুলিশ জানায় মেডিকেল চেকআপের পর তাকে তার বাবা-মায়ের কাছে ফেরত পাঠানো হবে।
গত ৭ এপ্রিল দুপুরে প্রতিবেশীর বাড়িতে দুধ সিন্নি রান্না শেষে শিশুটির সম্পর্কে দাদী এমন একজন তার আর এক দাদা দেলোয়ার মোল্লার ঘর থেকে প্লেট আনতে বলে। শিশুটি প্লেট আনতে গেলে অভিযুক্ত দেলোয়ার মোল্লা (৬০) শিশুটিকে কৌশলে ঘরের ভিতর নিয়ে হাত, পা ও মুখ বেঁধে ধর্ষণ করে। এই ঘটনা যেন কাউকে না বলে সেজন্য দেলোয়ার মোল্লা শিশুটিকে হত্যার হুমকি দিয়ে বাড়িতে পাঠিয়ে দেয়। বাড়িতে ফেরার পর শিশুটির চাচা ও চাচি শিশুটির শরীরজুড়ে কামড়ের দাগ ও পরণের কাপড় ভেজা দেখে শিশুটিকে জিজ্ঞাসা করলে শিশুটি ভয়ে ভয়ে সবকিছু তার চাচির কাছে বলে।
পরের দিন অর্থাৎ ৮ এপ্রিল রাতে ধর্ষণের বিষয়টিকে ধামাচাপা দিতে প্রতিবেশী গ্রাম্য মোড়ল সৈয়দ মোল্লা, আয়নাল মোল্লা, আবু কালাম, ইউসুফ মোল্লা, সবর মোল্লা, হায়দার মোল্লা আফজাল মোল্লা ও পলাশ মোল্লা শালিসের মাধ্যমে দুই লক্ষ টাকা দিয়ে মিমাংসার জন্য ভুক্তভোগী পরিবারটিকে চাপ প্রয়োগ করে। এছাড়াও অভিযুক্তকে ১০০ জুতার বারি মারা হবে বলে জানায়। কিন্তু ভুক্তভোগীরা তাদের প্রস্তাবে রাজি না হয়ে আইনের মাধ্যমে বিচার দাবী করলে শালিসকারী আয়নাল ও পলাশ শিশুটির পিতা ও চাচাকে গালিগালাজ করে এবং হুমকি প্রদান করে।
শিশুটির চাচা সবুর মোল্লা জানান, তাদের প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় পলাশ আমাকে গলা ধাক্কা দিয়ে শালিস থেকে বের করে দেয় এবং আমার বাবাকে নিয়ে গালি গালাজ করে। আর আয়নাল মোল্লা বলে তোরা মামলা করবি আর আমরা টাকা দিয়ে সব মিটায় নিবো। দেখি তোরা কত দুর যাইতে পারিস। তিনি ধর্ষক দেলোয়ার মোল্লার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবী করেন।
এলাকাবাসী জানান, এই দেলোয়ার ডাকাতি মামলায় হাজত খেটে কিছুদিন আগে জেল থেকে ছাড়া পাইছে। ওর চরিত্রও ভালো না। বিভিন্ন অকাম কুকাম করার কারণে গ্রামবাসীরা অনেকবার ওরে গাছের সাথে বাইন্দা পিটায়ছে। তারপরও ওর শরম হয় না। এইবার আপনারা ওর একটা কঠিন শাস্তির ব্যবস্থা করেন। নানা অপরাধ কইরা মেলা টাকা কামাইছে। সেই টাকার গরমে দেলোয়ার আর ওর ভাইরা কাউরেই মানুষ মনে করেনা।
অভিযুক্ত দেলোয়ার ও শালিসকারীরা বাড়িতে না থাকায় তাদের বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
এ ব্যাপারে ভাঙ্গা থানার ওসি মোঃ আশরাফ হোসেন জানান, বুধবার বেলা তিনটার দিকে ধর্ষণের ঘটনার একটি সংবাদ পেয়ে ভাঙ্গা উপজেলার নূরুল্লাগঞ্জ ইউনিয়নের হরুপদিয়া গ্রামে রবিউলের বাড়িতে পৌছাই। ভিকটিম শিশু ও তার মা-বাবার জবানবন্দি রেকর্ড করি। এরপর তাদের সকলকে থানায় নিয়ে আসি। এ ঘটনায় আজ রাতে দোষীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
Tag:
No comments: