প্রতিদিনের জীবন

প্রতিদিনের জীবন
ডেঙ্গু থেকে বাঁচতে করণীয়

ইসলামী জীবন

» »Unlabelled » ফরিদপুরে ঘুড়ি উৎসবে পদ্মা পাড়ে মানুষের ঢল

ফরিদপুরে ঘুড়ি উৎসবে পদ্মা পাড়ে মানুষের ঢল

জিল্লুর রহমান রাসেল

আকাশে উড়ছে নানা রং এর, নানা বর্নের ঘুড়ি। রয়েছে পঙ্খিরাজ, চিল, ড্রাগন, হাজারী গোলাপ, ডিঙি নৌকা, রোবট ঘুড়ি, রয়েছে জাতীয় পতাকার অবয়বে তৈরি ঘুড়িও। এসব ঘুড়ি দেখতে ও আনন্দ উপভোগ করতে হাজারো মানুষের ভিড় পদ্মার পাড়ে। মিলেমিশে সেই ঘুড়ি উড়াতে মেতে উঠেছে ফরিদপুরবাসী।

ফরিদপুর সদরের ডিক্রিরচর ইউনিয়নে পদ্মার পাড়ের এই এলাকাটি ধলার মোড় হিসেবে সকলের কাছে পরিচিত। গত সাত বছর ধরে এখানেই ঘুড়ি উৎসবের আয়োজন করে আসছে ফরিদপুর সিটি অর্গানাইজেশন নামে একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন। সেই ধারাবাহিকতায় ২৬ জানুয়ারি শুক্রবার বিকেলেচলো হারাই শৈশবেশ্লোগান নিয়ে পেপারটেক ইন্ডাস্ট্রি লিমিটেডের সহযোগিতায় সপ্তমবারের মতো ঘুড়ি উৎসবের আয়োজন করে সংগঠনটি।

বিকেল ৪টায় ঘুড়ি উড়িয়ে প্রধান অতিথি হিসেবে অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন জেলা প্রশাসক মো. কামরুল আহসান তালুকদার। সময় ফরিদপুর পুলিশ সুপার মোর্শেদ আলম, কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হাসানুজ্জামান হাসান, ডিক্রিরচর ইউপি চেয়ারম্যান মেহেদী হাসান মিন্টুসহ অনেকে উপস্থিত ছিলেন।

উৎসব দেখতে ফরিদপুর শহর ছাড়াও আশপাশের বিভিন্ন উপজেলার বাসিন্দারা ভিড় করেন। সেখানে ঘুড়ি বিক্রির ব্যবস্থাও ছিল। এই উৎসবে পরিবার নিয়ে এসেছেন ফরিদপুর শহরের চরকমলাপুর এলাকার বাসিন্দা তামান্না আক্তার।

তামান্না আক্তার বলেন, ‘ঘুড়ি উৎসব ফরিদপুরের ঐতিহ্যবাহী একটি উৎসবে পরিণত হয়েছে। দেশের অন্য কোথাও এরকম আয়োজন হয় কি-না জানা নেই। আমি এখানে গত তিন বছর ধরে আসছি, আমার খুবই ভালো লাগে। প্রতি বছর এই দিনটির জন্য অপেক্ষা করি। এবার পরিবারের সবাইকে নিয়ে এসেছি।

শহুরে নাগরিক জীবনে আমাদের ঐতিহ্য, সংস্কৃতি শিখরের কথা নতুন প্রজন্ম প্রায় ভুলতেই বসেছে। এখানে এসে যেন শৈশবে হারিয়ে গেছি। ঘুড়ি উড়ানো আমাদের বাঙালির সংস্কৃতির অবিচ্ছেদ্য অংশ এবং ঐতিহ্য। এমন আয়োজনে এসে মনে হয় আমরা যেন শিকড়ে চলে গেছি। এই তরুণ আয়োজকেরা আমাদের মনে করিয়ে দিয়েছে যে আমরা শৈশবে এভাবে ঘুড়ি উড়াতাম। ঘুড়ি উৎসবে এসে এভাবে নিজের ভালো লাগা প্রকাশ করেন, ফরিদপুর সরকারি রাজেন্দ্র কলেজের ইংরেজি বিভাগের সাবেক বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক দেবাশীষ দাস।

ফরিদপুর সিটি অর্গানাইজেশনের রোকন উদ্দিন বলেন, ‘ঘুড়ি আমাদের ঐতিহ্য সংস্কৃতি। সেই ঐতিহ্যকে ধারণ করে রাখতে প্রতি বছর এই আয়োজন করে থাকি। শৈশবের স্মৃতিতে ফিরে যেতে অনেকে রং-বেরঙের ঘুড়ি উড়াচ্ছে। এখানে ফরিদপুরের বাইরে থেকেও অনেকে এসেছে।

উদ্বোধনের সময় জেলা প্রশাসক মো. কামরুল আহসান তালুকদার আয়োজকদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, ‘ঘুড়ি আমাদের হারিয়ে যাওয়া শৈশবের স্বপ্ন, আমাদের বর্তমান যৌবনের স্বপ্ন। ঘুড়ি আকাশে যখন উড়ে বেড়ায় তখন আমরা শুধু তাকিয়েই থাকি না, এই সৌন্দর্য উপভোগও করি। এই সৌন্দর্য ফরিদপুরবাসীর মধ্যে ছড়িয়ে দেওয়ার জন্য সর্বাত্মক উদ্যোগ গ্রহণ করব।

জেলা প্রশাসক আরও বলেন, ‘চর কেন্দ্রিক এই উৎসবকে স্থায়ী রূপ দিতে আমাদের বিশেষ পরিকল্পনা আছে। ঘুড়ি উৎসবের পাশাপাশি হারিয়ে যাওয়া গ্রামীণ খেলাধুলা, বৈশাখী মেলাসহ বিনোদনমূলক উৎসবের ব্যবস্থা করা হবে।

«
Next
Newer Post
»
Previous
Older Post

No comments:

Leave a Reply